বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোটার : বাংলাদেশসহ বিশ্বে করোনা ভাইরাস ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। রবিবার ১১এপ্রিল দেশে করোনা ভাইরাসে ২৪ ঘন্টায় নতুন আক্রান্ত ৫৮১৯ জন, ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বেশিরভাগ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না, এর কারণে একের পর এক আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে দেশে আগামী (১৪এপ্রিল ২০২১ইং) থেকে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। তবে সম্পূর্ণ ভাবে লকডাউন শুরু হলেও এ সময়ে শিল্প-কারখানা চলবে। এর কারণে জনগণের মাঝে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, অন্যদিকে শ্রমিকদের চরম ভোগান্তি। শিল্প-কারখানার মালিক ও শ্রমিকদের মাঝে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে জনগণের মধ্যেও বিভ্রান্তি ও দ্বিধা। এতে জনসাধারণ দিশেহারা হয়ে পড়ছে।
রবিবার বিকেলে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এ কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমই এ) সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সভায় যুক্ত ছিলেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, ও বিজিএমই এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আবদুস সালাম, নব-নির্বাচিত সভাপতি ফারুক হাসান, বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী প্রমুখ। এর আগে, রোববার দুপুরে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে পোশাক খাতের বর্তমান ইস্যু নিয়ে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ ও ইএবি’র যৌথ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রফতানিমুখী তৈরি পোশাক খাতসহ বস্ত্রখাতের অন্যান্য সহযোগী শিল্পসমুহকে লকডাউনের আওতায়মুক্ত রাখার দাবি জানান এ খাতের শিল্প উদ্যোক্তারা।
উক্ত পোশাক কারখানার মালিকরা বলেন, যেখানে ইউরোপ, আমেরিকা, ব্রাজিলের মতো রাষ্ট্রগুলো হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে আমাদের সমম্বয়ের অভাব নেই। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কারখানায় কারখানায় উৎপাদন অব্যাহত রেখেছি।
সেন্টার ফর বাংলাদেশ, ইউকে বার্কলি ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জরিপ মতে, ৯৪ শতাংশ শ্রমিক বলেছেন, তারা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গাইডলাইন বিষয়ে সচেতন, তাদের দাবি-৯১.৪২ শতাংশ শ্রমিক বলেছেন, কারখানা থেকে তাদের কোভিড- ১৯ মোকাবেলায় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে। তাছাড়া শ্রমিকরা ছুটিতে গ্রামের বাড়ির দিকে রওনা দিলে করোনা সংক্রমণ আরও ছড়াবে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার লকডাউনে শিল্প কারখানা খোলা রাখার পক্ষে মত দেন তারা। এ বিষয়ে মালিক পক্ষ দাবী করছেন যে, মহামারি করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে আগামী ১৪এপ্রিল থেকে জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ রাখার পরিকল্পনা ছিলো সরকারের। তবে উন্নত বিশ্বে লকডাউন ঘোষণা করা হলেও রফতানিমুখী শিল্প কারখানায় উৎপাদন অব্যাহত আছে।
এ দিকে সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই ও গাজীপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাস বন্ধ থাকার কারণে গাড়ি না পেয়ে সকালে ৮-১০ কিলোমিটার রাস্তা হেটে পোশাক শ্রমিকরা তাদের কর্মস্থলে পৌঁছায়। কেউ কেউ আবার অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে রিক্সা নিয়ে পোশাক কারখানায় যেতে দেখা যায়। শ্রমিকদের দাবী-লকডাউন দিলে পুরোপুরিভাবে দেওয়া হোক। এরকম যাত্রীবাহী বাস বন্ধ করে শ্রমিকসহ যাত্রী সাধারণের ভোগান্তি ও হয়রানির মানে কি? তারা অনেকেই বলেন, শ্রমিকরা কি মানুষ না। স্বাধীন দেশে কেন পোশাক শ্রমিকদের স্বাধীনতা নেই। শ্রমিকদের দাবি- তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হোক। উক্ত বিষয়ে শ্রমিকরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।