শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১৭ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোটার : আশুলিয়ার চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে তিন প্রতারককে আটক করেছে র্যাব। এ সময় তাদের অফিস থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বেশকিছু কাগজ-পত্র জব্দ করা হয়।
শুক্রবার বিকেলে আটকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের শেষে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়।
এরআগে, বৃহস্পতিবার বিকেলে র্যাব-১ ও সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার এএসপি মোর্শেদুল হাসান এর নেতৃত্বে আশুলিয়ার মধ্য গাজীরচট এলাকার নালিজা রোডের কুসুম ভিলার ২য় তলার মেঘনেসা বাংলাদেশ লিঃ নামের একটি অফিস থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
আটকরা হলো- আশুলিয়ার গাজীরচট আড়িয়ার মোড় এলাকার মৃত রুহুল আমিন চৌধুরীর ছেলে মাসুম চৌধুরী পলাশ (৩৮), রাজশাহী জেলার মোহনপুর থানার বেড়াবাড়ী গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে নয়ন রানা (২২) ও বগুড়া জেলার গাবতলী থানার জামির বাড়ীয়া থানার আব্দুর রশিদের ছেলে রায়হান আলী (২৮)।
ভুক্তভোগী রাজিব বলেন, রায়হানের সাথে ফেসবুকে আমার পরিচয় হয়। পরিচয় সূত্রে তার কাছে আমার বেকারত্বের কথা শেয়ার করি। সে আমাকে বলে, আমি মেঘনেসা বাংলাদেশ লিঃ নামক একটি ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানিতে অনলাইন মার্কেটিং এ চাকুরী করি। সে আমাকে তার বস পলাশের মাধ্যমে ওই কোম্পানির অনলাইন মার্কেটিং এর চাকুরী পাইয়ে দিবে। পরে চাকুরীর জামানত হিসেবে আমার নিকট ২৫ হাজার টাকা দাবি করে। আমার চাকুরীর খুব প্রয়োজন বিধায় আমার পরিবার এবং আত্মীয় স্বজনের নিকট হইতে ধার দেনা করে ২৫ হাজার টাকা নিয়ে গত ০১ ফেব্রুয়ারি সকালে তাদের দেওয়া ঠিকানা মতে আশুলিয়ার মধ্য গাজীরচট নালিজা রোডের কুসুম ভিলার ২য় তলার অফিসে যাই। সে আমাকে কোম্পানির চেয়ারম্যান পলাশ ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর নয়ন রানা সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। তখন তারা উভয়েই আমাকে লোভ দেখায় যে, আমি যদি তাদের কোম্পানিতে চাকুরী করি, তাহলে তারা আমাকে প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা বেতন দিবে। আমি তাদের কথা সরল মনে বিশ্বাষ করে চাকুরীর জামানত হিসেবে ২৫ হাজার টাকা প্রদান করি। পরে তারা আমাকে চাকুরী না দিয়ে ঘুরাতে থাকে। পরবর্তীতে জানিতে পারি যে, তাহারা দীর্ঘদিন যাবত এইভাবে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে চাকুরীর জামানত হিসেবে টাকা নিয়ে প্রতারণা করে আসছে। আমার মতো প্রতারণার শিকার হয়েছে আরও ১৫-২০ জন ছাত্র। একপর্যায়ে টাকা ফেরত চাইলে, তারা টাকা ফেরত দিবে না বলে জানায়,এছাড়াও আমাদেরকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। আমরা পরবর্তীতে জানিতে পারি যে, তারা এমএলএম (মাল্টি লেভেল মার্কেটিং) এর মাধ্যমে প্রতারণা করছে।পরে আমিসহ অন্য ভূভোগীরা কোন উপায় না পেয়ে র্যাব-১ অভিযোগ দেই। পরে র্যাব এসে তাদেরকে আটক করে।
র্যাব-১ ও সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার এএসপি মোর্শেদুল হাসান জানান- প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। এ সময় তাদের অফিস হতে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বেশকিছু কাগজ-পত্র উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য যে, চাকরী নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার একটি অফিস থেকে এমএলএম প্রতারক পলাশকে আটক করে থানা পুলিশ।
তার আগে, ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর এ এন্ড ট্রেড কর্পোরেশন লিঃ নামের এক কোম্পনি খুলে কিছু ইলেক্টোনিক্স পণ্য বিক্রি বা বীমার নামে প্রতারণার অভিযোগে পলাশের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন রফিকুল ইসলাম নামের এক ভুক্তভোগী।