মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:০৩ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রচারণা শুরুর দিনে ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক আওয়ামী সংসদ সদস্য ও বর্তমান স্বতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার মো: তৌহিদ জং মুরাদের নির্বাচনী প্রচারণায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। তবুও সাভার ছিলো উৎসবের নগরী। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিলো। আনন্দ-উৎসবে মেতেছিলো মানুষ।
তিনি নির্বাচনে প্রচারণা শেষে সংক্ষিপ্ত জনসভা করেন। সেখানে নেতাকর্মী এবং উপস্থিত জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, শেখ হাসিনার আরেক মার্কা ঈগল, আমি পাশ করলে এই মার্কা নিয়ে শেখ হাসিনার গলায় ফুলে মালা পড়িয়ে দিবো। আমিতো নৌকাই, শুধু মার্কাটা হলো ঈগল বলে মন্তব্য করেন তালুকদার মো: তৌহিদ জং মুরাদ।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে শিমুলতলায় এলাকায় নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন শেষে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেছেন। এসময় তিনি রানা প্লাজা নিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা বলেনতো রানা প্লাজা কি আমি ফেলাইছি? রানা প্লাজা আমি বানাইছি? ওইটার মালিক কি আমি? ওখানে কি আমার কোনো ব্যবসা ছিল? ওখানে কি আমার কোনো অংশীদারিত্ব ছিল? ওই মার্কেটটা কি আমার আমলে বানানো হয়েছে? তাহলে কেন আমাকে দোষারোপ করা হলো। আমি মানুষ না, আমার কষ্ট লাগে না, আমার অভিমান হইতে পারে না। আর যেখানে আমার নেতা, আমার অভিভাবক, আমার বোন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চুপ থাকতে বলেছে, তাই দীর্ঘ ১০ বছর চুপ ছিলাম। এখন আমার নেত্রী ও অভিভাবকের পরামর্শে আমি নির্বাচনে এসেছি। আপানাদের কাছে ভোট চাই। আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করুন। কথা দিলাম আমি এলাকার উন্নয়ন করবো।
এ সময় তিনি বলেন আরও বলেন, আজকে ২০২৩-এর এই নির্বাচনে যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলছে, আসো, কে জনপ্রিয় প্রমাণ করো এবার। তাইতো আমি আসছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এতদিন চুপ থাকতে বলেছেন। এইবার বলেছেন মুখ খুলো। তাইতো মুখ খুললাম। আপনাদের কাছে আসলাম। আমিতো নৌকাই, শুধু মার্কাটা হলো ঈগল। এই মার্কাটা লাইয়া দয়া করে আপনারা যদি আমার নির্বাচনটা করে দেন। আরেকটা বার যদি সুযোগ দেন। তাহলে প্রথম ফুলের মালাটাতো জননেত্রী শেখ হাসিনার গলাই পড়াবো।
মুরাদ জং আরও বলেন, আমাকে অনেকে বলছে ১০ বছর দেখি নাই। ১০ বছর কই ছিল। মুরাদ জং ইতিহাসের পাতায় চলে গেছে। কেন মুরাদ জং কি রোহিঙ্গা, মুরাদ জং কি গাঙ্গে বেসে হাতরায় আইসে। মুরাদ জংয়ের বাড়ী আশুলিয়া। মুরাদ জংয়ের বাড়ী টংগাবাড়ী। মুরাদ জং আপনাদের ছেলে। আমার ইজ্জত আপনাদের ইজ্জত। আপনারা যদি জিজ্ঞেস করেন আমার যোগ্যতা কি, তাহলে বলবো আমি আপনাদেরকে ভালোবাসি। আর যদি বলেন আমার অযোগ্যতা কি? আমি আপনাদের সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী হায়দার, সাভার পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাজী আব্দুল হালিম, আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহাবউদ্দিন, সাভার সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল রানা, আব্দুল কাদের দেওয়ানসহ স্থানায় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
স্বতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার মো: তৌহিদ জং মুরাদের নির্বাচনী প্রচারণার স্থানে গিয়ে জানা যায়, নবম জাতীয় নির্বাচনের পর অন্তত ১০ বছর পরে আজই প্রথম মুরাদ জংয়ের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এই স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচারণা উপলক্ষে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পিকআপ, ট্রাক ও মোটরসাইকেলযোগে হাজার হাজার নেতাকর্মী সাভারের শিমুলতলায় জড়ো হতে থাকেন।
ইতিহাস পরিবহনের যাত্রী মাহবুবুল করিম বলেন, জরুরী কাজে সকালে ঢাকার উদ্দেশ্য বাইপাইল থেকে ইতিহাস পরিবহনের একটি বাসে উঠি। কিন্তু নবীনগর এসে গাড়ির চাপ বাড়ে। মহাসড়কের পাশেই ৭/৮টি পিকআপ বোঝাই লোক দেখে মনে হচ্ছিল কোথাও সমাবেশ হচ্ছে। বিপিএটিসি এসেই যানজট শুরু হয়। বিপিএটিসি থেকে সাভার পার হতেই প্রায় ১ ঘন্টা লেগেছে। গাড়ির যাতায়াতের ব্যবস্থা রেখে তাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করলে আমরা সাধারণ যাত্রীরদের জন্য ভাল হয়।
এ ব্যাপারে সাভার ট্রাফিক পুলিশের অ্যাডমিন (প্রশাসন) হোসেন শহীদ চৌধুরী বলেন, এক প্রার্থীর প্রচারণা থাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে প্রায় ৪ কিলোমিটারের মত সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। এটা ৫ মিনিটের মধ্যে ধাকবে না। ৫ মিনিটের মধ্যে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।