বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক : রংপুরের আদর্শপাড়ায় আঁখি মনি (১২) নামে এক গৃহকর্মীকে টাকা চুরির অভিযোগে অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
শনিবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেন গৃহকর্মীর মা শেরিনা বেগম। নির্যাতিত শিশুটি কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের মেলাবর গ্রামের তালিকাভুক্ত এক ভিক্ষুকের মেয়ে।মামলায় বাসার মালিক নওগাঁয় কর্মরত যুগ্ম জেলা দায়রা জজ রেজাউল বারী রিপন (৪৫), তার স্ত্রী দন্তচিকিৎসক কার্নিজ আফি কান্তা (৩৫), শাশুড়ি খালেদা বেগম (৫৫) এবং শ্যালিকা শাপলা বেগমকে (৪০) আসামি করা হয়েছে।
নির্যাতিত শিশুটি বর্তমানে কোতোয়ালি থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের বগুলাগাড়ি (আদর্শপাড়া) এলাকার ডালিম চন্দ্র রায় নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে মাসিক এক হাজার টাকা বেতনে আঁখি মনিকে গৃহকর্মী হিসেবে কাজের জন্য রংপুর শহরের আদর্শপাড়া মহল্লার দন্তচিকিৎসক কান্তা বেগম এবং রেজাউল বারী দম্পতির বাসায় দেয়া হয়। প্রায় দুই বছর ধরে আঁখি মনি সেখানে কাজ করতো। ১২৫ টাকা চুরি সন্দেহে গত ২১ নভেম্বর রাত ১২টার দিকে আসামিরা আঁখি মনিকে মারধরের পর গোপনাঙ্গে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেন। খবর পেয়ে ২৮ নভেম্বর বিকেলে ডালিম চন্দ্র রায়সহ আঁখি মনির মা শেরিনা বেগম রংপুরে ওই বাসায় যান।
সেখানে গেলে তারা শেরিনাকে জানান, তার মেয়ে টাকা চুরি করেছে। তাই তাকে আর বাসায় রাখবে না। এ অবস্থায় দন্তচিকিৎসক কার্নিজ আফি কান্তা ও তার স্বামী সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে মেয়েকে মায়ের হাতে তুলে দেন। গ্রামে ফিরে মেয়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখে গ্রামবাসীকে বিস্তারিত জানান মা শেরিনা বেগম।ওই গ্রামের বাসিন্দা নুর উদ্দিন বলেন, বিষয়টি জানার পর জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে বিস্তারিত জানাই। এরপর পুলিশ এসে ৩০ নভেম্বর শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এদিকে পুরো ঘটনা জানিয়ে গৃহকর্মী আঁখি মনির মা শেরিনা বেগম কিশোরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শনিবার রাতে যুগ্ম দায়রা জজসহ চারজনকে আসামি করে মামলা রেকর্ড করা হয়।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) শহিদুল্লাহ কাওছার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এসএস