বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫৫ পূর্বাহ্ন
সাভারে বহুরূপী টাউট আওয়ামীলীগ নেতা জুট সেলিম সরকার পতনের পরে এক সপ্তাহ ঘরের মধ্যে থেকে আবার বের হয়ে প্রকাশ্যে এসেছেন। এখন তিনি পরিচয় দিচ্ছেন বিএনপি নেতা হিসেবে। বিএনপিতে ভিড়তে সেলিম বিভিন্ন পর্যায়ের বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ী বাড়ী যাচ্ছেন। ধর্ণা দিয়েছেন একাধিক নেতার বাসায়। তবে বিএনপি নেতাকর্মীগণ তাকে কেউ গ্রহন করতে চাচ্ছে না। বিষয়টি এখন সাভারে টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে।
সাভার পৌরসভার ব্যাংক টাউনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রথম শহীদ শাইখ আশহাবুল ইয়ামিন বাসায় সমবেদনা জানাতে বিএনপি নেতাসহ কোন নেতা আসলেই হাজির হচ্ছেন সেলিম আহম্মেদ ওরফে জুট সেলিম ওরফে সেলিম নয়ন। আওয়ামীলীগ সরকার আমলে দীর্ঘ ১৬ বছর তিনি ছিলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনামুর রহমান ও তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদের ঘনিষ্টজন। বিগত সংসদ নির্বাচনে তিনি সমর্থন দিয়েছিলেন মুরাদ জংকে । বিভিন্ন জনসভায় বক্তব্য দিয়ে মুরাদ জংয়ের ঈগল মার্কায় ভোট চেয়ে মাঠ গরম করে রাখতেন। এছাড়া তিনি বলতেন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে আগামী দিনে বিএনপি নেতাদের পিঠের চামড়া থাকবেনা। মুরাদ জং সবার সামনে জুট সেলিমকে পরিচয় করিয়ে দিতেন কলিজার ভাই আবার কখনও বেয়াই কখনও ছোট ভাই। সেই সেলিমের আজ ব্যাপক পরিবর্তন। তিনি এখন বিএনপি নেতা সাজতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তবে সাভার থানা বিএনপি নেতারা তাকে গ্রহন করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
জানাগেছে সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক টাউনের বাসিন্দা সেলিম এক সময়ে রিক্সা চালিয়ে ও আইসক্রীম বিক্রয় করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তার বাড়ি কেরানীগঞ্জের লংকার চর গ্রামে। হত দরিদ্র পরিবারের সন্তান সেলিম পৌর এলাকার আইচানোয়াদ্ধায় সাভার টেক্সটাইলে হেলপার হিসাবে কাজ নেন। কাছেই রাজাশন মন্ডল পাড়ার খালেক মন্ডলের বাসায় ২শ টাকা ঘর ভাড়া নিয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতেন। পরে হেমায়েত পুর এলাকার এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ির সাথে কৌশলে সম্পর্ক স্থাপন করেন। তার দয়ায় গার্মেন্টের কাটা কাপড়ের বা জুট ব্যবসায় জড়িত হন। এর পর থেকে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি এখন সাভার পৌর সভার ব্যাংক টাউনে ৬টি বহুতলা বিশিষ্ট বাড়ীর মালিক। ধামরাইয়ের কালামপুরে বাগান বাড়ি,কলমায় ৩টি প্লট,রাজাশনে ৪টি মূল্যবান প্লট,লংকার চরে ৩০ বিঘা জমি,জামাল পুরে ২৬ বিঘা জমি,রাজবাড়ীর কালুখালীতে প্রথম স্ত্রীর গ্রামে ৫০ বিঘা জমিসহ অঢেল টাকার মালিক। আওয়ামীলীগের পদ পেতে তিনি মরিয়া ছিলেন। এ জন্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডাক্তার এনামুর রহমানের পেছনে খরচ করেছেন প্রায় কোটি টাকা। মুরাদ জংয়ের পেছনে ব্যায় করেছেন সমসংখ্যক টাকা। তার ছেলের শশুর সাভার ইউনিয়নের বিনা ভোটের চেয়ারম্যান সোহেলা রানার পেছেনেও খরচ করেছেন সমপরিমান টাকা। কিন্তু পদ ভাগাতে পারেননি। তবে টাকার জোরে সভা মঞ্চে সেলিমের আসন থাকতো মঞ্চের অগ্রভাগে। বক্তব্য দিতেন গরম গরম। সরকার পতনের পর রাতারাতি তিনি বদলে গেছেন। বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর নাম ভাংগিয়ে তিনি তার সাথে তোলা ছবি নানান জনকে দেখিয়ে বলে বেড়াচ্ছেন আমি এখন বিএনপির নেতা। ব্যাংক টাউনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাভারে প্রথম শহীদ শাইখ আশহাবুল ইয়ামিন বাসায় সমবেদনা জানাতে বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি সমবেদনা জানাতে আসার পর সেলিম সেখানে হাজির হয়ে তার সাথে কবর জিয়ারতে অংশ নেন। কবর জিয়ারতেরকালে কৌশলে বিএনপির এ নেতার সাথে ছবি তুলে ফেইসবুকে ছেড়ে দেন। এখন বিভিন্নজনের নিকট প্রচার করেন তিনি শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর ঘনিষ্টজন। তিনি শীঘ্রই পদ পেয়ে যাবেন। সেলিম আহম্মেদ ওরফে জুট সেলিম ওরফে সেলিম নয়ন সাভারের অনেক বিএনপি নেতার বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন দলে যোগদান করতে। কিন্তু সবাই তাকে দুর দুর করে তাড়িয়ে দিচ্ছেন। এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে সাভার পৌর বিএনপির সভাপতি খন্দকার শাহ মাইনুল হোসেন বিল্টু জানান জুট সেলিম আওয়ামীলীগের লোক। দলীয় নেতা তারেক রহমানের নির্দেশ আছে অন্য দলের কেউই এখন বিএনপিতে যোগদান করতে পারবেনা তাই সেলিমের যোগদানের কোন সূযোগ নেই।