সোমবার, ০২ Jun ২০২৫, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন
কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসিসহ ১১ জনের যাবজ্জীবন। ছবি: সংগৃহীত
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক : কুষ্টিয়ায় ফরিদুল নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা মামলায় এক আসামির ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ওই মামলায় অপর ১১ আসামির প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও বিশ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছর সশ্রম কারাভোগের আদেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী এ রায় প্রদান করেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ওই আসামির নাম জগো (৩০)। সে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বানিয়াপাড়া গ্রামের নফছের মণ্ডলের ছেলে।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো-মো. ইলাম মন্ডল ওরফে কালু (৩২), বাদশা ওরফে বাশি মণ্ডল, মো. আমিরুল ইসলাম (৩৫) এবং পালাতক আসামিরা হলেন- মো. শহিদুল ইসলাম, মো. আলিম ওরফে ঝড়ো (৩৮), বাবলু (৪০), রহমত ওরফে সাইদুল (২৬), মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান (৩৫), আলী হোসেন (২৫), আসাদুল (২১) ও ইউনুচ (৩৫)। এরা সবাই কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বাসিন্দা।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ২৪ অক্টোবর কুষ্টিয়া সদর উপজেলার অন্তর্গত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানাধীন বারুইপাড়া ব্রিজের রেলিংয়ের ওপর থেকে দেহবিহীন মাথা এবং পার্শ্ববর্তী বিল থেকে মস্তকবিহীন মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ইবি থানার এসআই মো. নূরুজ্জামান মল্লিক থানায় এজাহার দায়ের করেন। পরবর্তীতে পুলিশি তদন্ত ও আসামিদের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে থেকে ফরিদুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়।
অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ে অপহরণকারী চক্রের হোতা ফরিদুলের সাথে তার সহযোগীদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আসামি জগোসহ অন্যান্যরা ধান কাটা কাচি দিয়ে ফরিদুলকে জবাইয়ের পর দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে। হত্যার পর তার বিচ্ছিন্ন মাথা ও মৃতদেহ পৃথক পৃথক স্থানে আসামিরা ফেলে রাখে। পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী কামাল হোসেন মামলার আংশিক তদন্ত করেন। পরবর্তীতে মামলাটির তদন্তভার কুষ্টিয়ার গোয়েন্দা পুলিশের ওপর অর্পণ করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মো. মনিরুল ইসলামের তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। তদন্ত শেষে ওই পুলিশ কর্মকর্তা ২০১৬ সালের ২০ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। এছাড়া মৃত্যুবরণ করায় আসামি নজরুল ইসলাম ওরফে অমূল্য ও আমিরুল ইসলামকে মামলার দায় হতে অব্যাহতি দানের প্রার্থনা করা হয়। মামলাটি বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য অভিযোগপত্রে বর্ণিত আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল পেনাল কোডের ৩৬৪/৩০২/৩৪ ধারায় আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১৬ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। এছাড়া পুলিশের তদন্ত ও আসামিদের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে থেকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়।
মামলাটি আসামিদের পক্ষে পরিচালনা করেন এ্যাডভোকেট মো. আমান উল্লাহ নান্টু ,এনামুল হক, জাকিয়া তামান্না (রুনা) ও মো. আব্দুল্লাহ আল আসাদুজ্জামান।
সরকারি কৌসুলি (পিপি) এ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী জানান, মামলাটি আদালতে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে ওই দণ্ডাদেশ প্রদান করেন।
এসএস