বৃহস্পতিবার, ০৫ Jun ২০২৫, ১১:৫৩ অপরাহ্ন
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক : টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে দুই শিশু অপহরণের পর হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড, তিনজনের আমৃত্যু যাবজ্জীবন এবং তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে, তাদের এক লাখ করে অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাউদ হাসান এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-ঢাকার ধামরাইয়ের চর চৌহাট তারা মিয়ার ছেলে মিল্টন (২২), শামছুল হকের ছেলে বাহাদুর মিয়া (২২) ও মির্জাপুর উপজেলার সুজানিলজা গ্রামের বাছেদ মিয়ার ছেলে রনি মিয়া (২৫)।
আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-ঢাকার ধামরাইয়ের চৌহাট গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে শাহিনুর এলাইজ শাহা (৩০), শশ্বধরপট্টি গ্রামের মরেজের ছেলে জহিরুল ইসলাম (২০) ও মির্জাপুর উপজেলার আমরাইল তেলীপাড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে আব্দুল মালেক (৩৫)।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন-ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট গ্রামের তাজেল মিয়ার ছেলে আরিফ (২৮), মির্জাপুর উপজেলার আমরাইল তেলীপাড়ার জব্বার মল্লিকের ছেলে জাকির হোসেন (২৮) ও ধামরাই উপজেলার চর চেহৈাট গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে শামীম মিয়া (২৫)। এদের মধ্যে আরিফ পলাতক রয়েছেন।
রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি খোরশেদ আলম।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি বিকেলে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার হাড়িয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চলছিল। ওই প্রতিযোগিতা দেখতে যায় ঢাকার ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট এলাকার প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের ছেলে শাকিল (১০) ও একই গ্রামের প্রবাসী আবু বক্করের ছেলে ইমরান (১১)। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দেখতে গিয়ে চতুর্থ শ্রেণির ওই দুই শিক্ষার্থী অপহরণের শিকার হয়।
পরদিন ২৮ জানুয়ারি মোবাইল ফোনে অপহরণকারীরা তাদের দুইজনের মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা দাবি করে। ২৯ জানুয়ারি রাতে মির্জাপুর উপজেলার হাড়িয়া গ্রামের একটি লেবুবাগান থেকে নিখোঁজ ওই দুই শিশুর জবাই করা লাশ উদ্ধার করা হয়। ৩০ জানুয়ারি এক শিশুর মা জোসনা বেগম বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ তদন্ত শেষে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে গত ৮ জুন আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। চার্জশিটভুক্ত ১১ জনের মধ্যে শহিদুল ইসলাম ও মনোয়ার নামে দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়। আর আট আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
রায় ঘোষণার সময় ওই আট আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি এক আসামি আরিফ পলাতক রয়েছেন। এর মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মিল্টন নিহত শিশু ইমরানের ফুফাতো ও রনি মিয়া চাচাত ভাই।
মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী জহিরুল ইসলাম জানান, ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আসামিরা জড়িত নয়। এই রায়ে তারা সন্তুষ্ট নন। এ বিষয়ে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট মামলার বাদী জোসনা বেগম। অতিদ্রুত রায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এসএস