মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৪২ পূর্বাহ্ন
স্পোর্টস রিপোর্টার: আগেই জানা, মহাদেশীয় ক্রিকেটে এর আগে এশিয়া কাপ ও এশীয় যুব ক্রিকেটের ফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু এখনো ট্রফি জেতা হয়নি। আর এশিয়ান ইমার্জিং ক্রিকেটে এর আগে তিনবার খেলে একবারও সেমির প্রাচীর টপকে ফাইনালে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
এবারই প্রথম প্রাণ ফ্রুটো ইমার্জিং এশিয়া কাপের ফাইনালে টাইগাররা। গতকাল বৃহস্পতিবার শেরে বাংলায় দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আফগানিস্তানকে ৭ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালের মঞ্চে নাজমুল হোসেন শান্ত, সৌম্য সরকার, নাইম শেখ ও আফিফ হোসেন ধ্রুবরা।
আগামীকাল ২৩ নভেম্বর শনিবার সে কাঙ্খিত ফাইনাল। তিনবারের না পারা বাংলাদেশ কি এবার প্রথমবার ফাইনালে উঠেই হাসবে শেষ হাসি?
ভারতকে গ্রুপ পর্বে উড়িয়ে (৬ উইকেটে হারানো) সেমির যুদ্ধে আফগানদের হেসে খেলে হারানোর পর এবার ফাইনালে পাকিস্তানিদের বিপক্ষে জয়ের হাসিতে মাঠ ছাড়বে টাইগাররা? সে কৌতুহলী প্রশ্নর জবাব মিলবে কাল শনিবার।
টিম বাংলাদেশ অবশ্য ট্রফি জেতার লক্ষ্যেই মাঠে নামবে। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আর ওপেনার সৌম্য সরকার সেমিফাইনালের আগে ও ফাইনালের টিকেট কনফার্ম করার পর প্রায় একই সুরে কথা বলেছেন।
নিজেদের শক্তি সামর্থ্যে তাদের বিশ্বাস প্রবল। তারা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, নিজেদের কাজগুলো ঠিকমত করতে পারলে শিরোপা জেতা সম্ভব। শান্ত ও সৌম্যরা অমন চিন্তা করতেই পারেন। কারণ বাংলাদেশ হচ্ছে এ আসরে একমাত্র দল, যাদের অন্তত চারজন ক্রিকেটার (অধিনায়ক শান্ত, সৌম্য, নাইম শেখ আর আফিফ হোসেন) এরই মধ্যে কোন না কোন ফরম্যাটে জাতীয় দলে খেলে ফেলেছেন।
সেই দলের প্রতিপক্ষ যারা খেলতে এসেছেন, তাদের ৯০ শতাংশই জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চড়াননি। বেশিরভাগই এমন এক আন্তর্জাতিক আসরে প্রথম খেলছেন। সেই সব অনভিজ্ঞ পারফরমারদের সাথে শান্ত, সৌম্যরা যে রীতিমত বড় তারকা। এখন বড় তারকাদের কাজই হলো মাঠে ও জায়গামত নিজেদের সেরা প্রমাণ করা।
মেটা দাগে বলতে গেলে বলতে হবে, কালকের ফাইনালে বাংলাদেশই ফেবারিট। আর শান্ত ও সৌম্যও আছেন বেশ ফর্মে। এই আসরে এখন পর্যন্ত প্রায় ম্যাচে ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলে রান করেছেন।
অধিনায়ক শান্ত (হংকংয়ের বিপক্ষে ২২ নট আউট, ভারতের সাথে ৮৮ বলে ৯৪, নেপালের সাথে ৫৬ বলে ৫৯ আর সেমিফাইনালে আফগানদের সাথে ৬৮ বলে ৫৯ রান), ওপেনার সৌম্য সরকার (প্রথম দুই ম্যাচে ৮৪*ও ৭৩ আর সেমিফাইনালে বল হাতে ৩ উইকেট শিকারের পর ৫৯ বলে ৬১ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে হয়েছেন ম্যাচ সেরা)।
ওপেনার নাইম শেখ সে তুলনায় কম রান করেছেন। হংকংয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৫২ বলে ৫২ করার পর আর ৩০ এর ঘরেও যেতে পারেননি। ইয়াসির আলী রাব্বি ও আফিফ হোসেন ধ্রুব তুলনামূলকভাবে সুযোগ পেয়েছেন কম। তবে যখনই দরকার পড়েছে, তখনই দায়িত্ব নিয়ে খেলেছেন। সেমিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে নাইম, সৌম্য আর অধিনায়ক শান্ত আউট হবার দায়িত্ব নিয়ে খেলে ম্যাচ শেষ করে বিজয়ীর বেশে সাজঘরে ফিরেছেন আফিফ ও ইয়াসির রাব্বি।
বোলারদের ভেতর সবচেয়ে উজ্জ্বল পেসার সুমন খান (৪/৩৩, ৪/৬৪ ও ৩/২৯) অবশ্য সেমিফাইনালে সুবিধা করতে পারেননি। এছাড়া অফস্পিনার মেহেদি হাসান, লেগস্পিনার মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদি ও তানভির ইসলামও প্রায় খেলায় ভালো বল করেছেন। আরেক সম্ভাবনাময় পেসার হাসান মাহমুদ সেমিফাইনালে দেখিয়েছেন বল হাতে বারুদ ঝরানোর পর্যাপ্ত সামর্থ্য আছে তার। আফগান ফ্রন্টলাইন ব্যাটিং মেরুদন্ড ভেঙ্গেছে হাসান মাহমুদের বলেই।
মোদ্দা কথা, ব্যালেন্সড দল বাংলাদশের। ফাইনালে তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেন কেবল পাকিস্তানি ফাস্ট বোলাররা। তিন পাকিস্তানি দ্রুত গতির বোলার ভারতের বিপক্ষে বল হাতে আগুন ঝরিয়ে দলকে ফাইনালে তুলেছেন। পাকিস্তান পেস অ্যাটাকে আছেন এরই মধ্যে জাতীয় দলে খেলা মোহাম্মদ হাসনাইন। দেখা যাক, পাকিস্তানি পেসারদের বিপক্ষে কি করেন নাইম, সৌম্য, শান্ত আর আফিফ-ইয়াসির রাব্বিরা!
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০/এমএস