সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:০৯ অপরাহ্ন
আশিকুল ইসলাম বিটু (ছবিতে নেই) ছাড়া বহিষ্কৃত এই ২৫ জনের সবার নাম পুলিশের অভিযোগপত্রে রয়েছে৷ ফাইল ছবি:
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক: বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২৬ জনকে আজীবন বা স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় ৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে৷
আবরার হত্যার ঘটনায় বুয়েটের করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বুয়েটের বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক ও বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনের সদস্যসচিব অধ্যাপক মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়৷ অধ্যাপক মিজান নিজেও প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন৷
গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী৷ এই ঘটনার পর থেকে প্রথমে ক্যাম্পাসে আন্দোলন ও পরে একাডেমিক অসহযোগে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এতে বুয়েট কার্যত অচল রয়েছে। ওই ঘটনায় আবরারের বাবার করা মামলায় গত ১৩ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ৷ অভিযোগপত্র জমার প্রতিক্রিয়ায় ১৪ নভেম্বর শিক্ষার্থীরা বলেছিলেন, তিনটি দাবি বাস্তবায়ন হলে তাঁরা একাডেমিক অসহযোগ থেকে সরে গিয়ে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরবেন৷ সেই দাবিগুলোর একটি ছিল অভিযোগপত্রে নাম আসা ছাত্রদের বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার৷
যেসব শিক্ষার্থীকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে, তাঁরা হলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সমাজসেবাবিষয়ক উপসম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা, উপদপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, সহসম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু, সাবেক সহসভাপতি এস এম মাহমুদ সেতু এবং সদস্য ও কর্মী মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মুনতাসির আল জেমি, মুজাহিদুর রহমান, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, এহতেশামুল রাব্বি তানিম, শামীম বিল্লাহ, মাজেদুর রহমান, আকাশ হোসেন, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান জিসান, মোয়াজ আবু হোরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত ও মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম৷ এঁদের মধ্যে আশিকুল ইসলাম বিটু ছাড়া বাকি সবার নাম পুলিশের অভিযোগপত্রে রয়েছে৷
বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ছয়জন হলেন বুয়েটের শেরে বাংলা হলের ছাত্র আবু নওশাদ সাকিব, সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ গালিব, মো. শাওন মিয়া, সাখাওয়াত ইকবাল অভি ও মো. ইসমাইল৷ আবরার হত্যার ঘটনায় বিভিন্ন পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট থাকাসহ কয়েকটি অভিযোগে তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে৷
আবরার হত্যায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বুয়েটের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অন্যতম মুখপাত্র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মাহমুদুর রহমান সায়েম প্রথম আলোকে জানান, অভিযুক্তদের বহিষ্কারের বিষয়টি তাঁরা জানতে পেরেছেন৷ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে তাঁরা পরে এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানাবেন৷
আরও পড়ুন:
আবরার হত্যায় বুয়েটের ২৫ ছাত্রের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র
আবরারকে পিটিয়ে হত্যার সিদ্ধান্ত হয় গেস্টরুমে
অভিযুক্ত প্রত্যেকের ফাঁসি চান আবরারের মা
হত্যাকারীরা উচ্ছৃঙ্খল আচরণে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল
আবরার হত্যা মামলার বিচার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে: আইনমন্ত্রী
এমএস