সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক : মালয়েশিয়ায় করোনাভাইরাসে কর্মহীন ৯ বাংলাদেশিসহ ৪৯ জন অভিবাসী শ্রমিক আত্মহত্যা করেছে। এর মধ্যে ১৪ জন মিয়ানমারের নাগরিক। সম্প্রতি দেশটির সংবাদ মাধ্যম, ‘হারিয়ান মেট্রো’, ‘মালয়েশিয়া কিনি’ এবং ‘বুকিত আমান’ (সিআইডি) ও বালাই (থানা) পুলিশের আলাদা আলাদা প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আত্মহত্যাকারী অভিবাসীর মধ্যে বাংলাদেশের ৯ জন, মিয়ানমারের ১৪ জন, নেপালের ৯ জন, ভারতের ৫ জন, ইন্দোনেশিয়ার ৬ জন, পাকিস্তানের ২ জন, ভিয়েতনামের ১ জন এবং ব্রিটিশ ১ জন ও অস্ট্রেলিয়ার ১ জন নাগরিক রয়েছেন। বাকিদের এখনো পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদ মাধ্যমগুলো।
এদিকে পুলিশের এই রিপোর্ট উদ্বেগজনক, কারণ প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বলছিলেন দেশটির মানবাধিকার সংস্থার এক কর্মী।
৪ ডিসেম্বর ‘জুস’ অনলাইনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া একটানা দীর্ঘ লকডাউনে অভিবাসী কর্মীরা তাদের কর্ম হারিয়েছে। এমতাবস্থায় চরম আর্থিক ও খাদ্য সংকটে পড়ে এবং অনিশ্চিত ছিল অভিবাসী শ্রমিকদের কর্ম জীবন।
লকডাউন চলাকালীন সরকার তার দেশের নাগরিকদের প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট হারে আর্থিক অনুদান প্রদান করেছে। যার কারণে মালয়েশিয়ানদের দৈনন্দিন জীবন স্বাভাবিকভাবেই কেটেছে। অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটানো অভিবাসীদের কপালে জোটেনি এক মুঠো সরকারি সাহায্য।
বেসরকারিভাবে অনেকেই যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছেন, যা সব অভিবাসীদের ভাগ্যে জোটেনি। অভিবাসী কর্মীরা যেমন কর্মহীন হয়ে অনিশ্চয়তায় ছিল তেমনি তাদের নিজ দেশে থাকা পরিবারগুলো একই অবস্থায় ছিল।
মানবাধিকার সংস্থা এনএসআই-এর নির্বাহী পরিচালক এ্যাড্রিয়ান পেরেরা বলেন, মালয়েশিয়া তাদের নিজেদের স্বার্থের জন্য বারবার ভুলে যায় অভিবাসী শ্রমিকরা দেশটির উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এমনকি পরিসংখ্যানে দেখা যাবে তাদের দ্বারা মালয়েশিয়ায় অপরাধও কম হয়। অথচ বিদেশিদেরকে অপরাধীর মতো দেখা হয় এবং তাদের করোনাভাইরাসের উচ্চ ঝুঁকি হিসেবে চিন্তা করা হয়।
মালয়েশিয়ার তেনেগানিতার নির্বাহী পরিচালক গ্লোরিন দাস এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, অভিবাসী কর্মীদের আত্মহত্যার সংখ্যাটি আরো বেশি। সব ঘটনা মিডিয়াতে আসেনি। সরকার তার নিজের নাগরিকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করলেও বিদেশিরা কোনো সহযোগিতা পায়নি। সবচেয়ে বড় কতা হলো আত্মহত্যা একটি প্রতিরোধযোগ্য সমস্যা।
তিনি বলেন, বিদেশিদের সরকার সঠিক পন্থায় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পুনর্বাসন করা উচিত। তাদের সম মর্যাদা দিয়ে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে এবং এখনই তাদের মানসিক স্বাস্থ্য-সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
এসএস