মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৩ পূর্বাহ্ন
দিবারাত্রির টেস্টে বড়ো নজরে থাকবেন পেসাররা। গতকাল অনুশীলনে আল আমিন ও আবু জায়েদ — মোশারফ হোসেন, কলকাতা থেকে
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক: সাদা পোশাকের ক্রিকেটে বাংলাদেশের রেকর্ড বরাবরই বিবর্ণ। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াকে হারানোই বড়ো অর্জনগুলোর একটি। ২০ বছর অতিবাহিত করার বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট হঠাৎ করেই নতুন প্রাণ পাচ্ছে। ১১৭তম টেস্ট ম্যাচে যে নতুন রং লাগছে। ঘরের মাঠ মিরপুর থেকে প্রায় ৩১৬ কি.মি. দূরে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে আজ দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম দিবারাত্রির টেস্ট খেলতে নামছে বাংলাদেশ। গোলাপি বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হচ্ছে আজ।
ইডেনে শক্তিশালী ভারতের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে মুমিনুল হকের দল। গোলাপি বলে দুই দেশেরই এটি প্রথম টেস্ট। ইন্দোরে প্রথম টেস্ট হেরে ১-০-তে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। ইডেনে তাই সিরিজে সমতা ফেরানোর টার্গেটেই খেলবে মুমিনুল বাহিনী।
দুই দেশের প্রথম দিবারাত্রির টেস্ট বলে কথা, ইডেনে থাকছে বড়ো আয়োজন। ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল (সিএবি) একগাদা আয়োজন রাখছে ম্যাচকে ঘিরে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি থাকবেন। দুজন মিলে ঘণ্টা বাজিয়ে ম্যাচ উদ্বোধন করবেন। আরো কত কত আনুষ্ঠানিকতা।
ক্রিকেট দুনিয়ার অনেক দেশ খেলে ফেললেও বাংলাদেশ-ভারত, গোলাপি বলের স্বাদ আগে নেয়নি। তাই ক্রিকেটারদের মাঝেও অনেক রোমাঞ্চ রয়েছে। গতকাল বাংলাদেশের অধিনায়ক অবশ্য বলেছেন, রোমাঞ্চ বলে ২২ গজের লড়াইয়ের দিকেই ফোকাস করছে তার দল।
পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে ম্যাচের বহিরাঙ্গের আয়োজন ছুঁয়ে যাচ্ছে না বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। মুমিনুলরা ম্যাচের পানেই তাকিয়ে। গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক বলেছেন, ‘বাইরে কী হচ্ছে না হচ্ছে আমার মনে হয় না, পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে এটা আমাদের প্রভাবিত করবে। এই চাপ কোনোভাবেই আসা উচিত না। যে যার কাজ ঠিক মতো করছি। চাপ চলে আসার কোনো সুযোগ নাই।’
গোলাপি বলের রোমাঞ্চকেও পাশে রাখছেন মুমিনুল। তিনি বলেছেন, ‘দুই দলের কেউ গোলাপি বলে খেলেনি। এটা দুই দলের জন্যই নতুন। আমার মনে হয়, দুই দলই এই ম্যাচ নিয়ে রোমাঞ্চিত। কলকাতার সবাই এই ম্যাচের অংশ হতে চায়। পরিবার-স্বজন নিয়ে মাঠে আসতে চায়।’
ইন্দোরের ভুল শুধরে ইডেনে নিজেদের সেরাটা দিয়ে লড়তে চায় বাংলাদেশ। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে অনেক উন্নতি দরকার সফরকারীদের। ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ফেরাতে চাইলে মুশফিক-ইমরুলদেরকেই পারফর্ম করতে হবে।
গতকাল তিনি বলেছেন, ‘আপনি যখন একটা ম্যাচ খেলতে নামবেন তখন আগের ম্যাচ জিতেছেন না হেরেছেন সেটা নিয়ে চিন্তা করতে পারবেন না। খারাপ-ভালো যেটাই হোক, সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আপনি পরের ম্যাচের দিকে মনোযোগ দিতে পারবেন। আগে ম্যাচে আমরা যেসব ভুল করেছি, সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে এই ম্যাচে কাজে লাগাব—এটাই আমি আশা করি।
মুমিনুলের কাছে সরলীকরণ এমন, ক্রিকেটই খেলতে হবে বাংলাদেশকে। বলের আচরণ নিয়ে ২২ গজেই ভাবতে চান তিনি। গতকাল বলেছেন, ‘দিন শেষে আপনাকে তো ক্রিকেটই খেলতে হবে। আমরা তো ক্রিকেটই খেলব। গোলাপি বল কেমন আচরণ করবে, এটা নিয়ে একটু আগ্রহ আছে সবার। এর বাইরে আমাদের রোমাঞ্চ কেবল খেলা নিয়ে।’
ভারতীয় পেসারদের সামলাতে ব্যাটসম্যানদের কাছে আগের বেশি ধৈর্য্য আশা করছেন অধিনায়ক। ইডেনের ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৭০ হাজার দর্শক। মুমিনুল দর্শকদের উপস্থিতিকে চাপ হিসেবে নিতে নরাজ। দর্শকরা বৈরী হলেও সেটি উপভোগেই নিস্তার দেখছেন তিনি। বাংলাদেশের অধিনায়ক বলেছেন, ‘দর্শক যদি মাঠে থাকে আমার সব সময় খেলতে ভালো লাগে। খেলাটা অনেক বেশি মজা হয়, আমি এভাবেই চিন্তা করি। আমার মনে হয় না, এটা কোনোভাবে চাপ হবে।
এমএস