রবিবার, ০১ Jun ২০২৫, ০১:০২ পূর্বাহ্ন
জাতীয় নির্বাচন, সিটি করপারেশনের নির্বাচন, পৌর নির্বাচনে প্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বর্জ্য অপসারণ করলেও ইউপি নির্বাচনের বর্জ্য অপসারণ করবে কে এমন প্রশ্নই উঠেছে।
সাভার উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ১৮ দিন আগেই নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে হয়ে গেলো পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। কিন্তু এই শিল্পাঞ্চলে প্রার্থীদের প্রচারণার জন্য সাটানো ব্যানার-পোস্টার অপসারণের উদ্যোগ নেই নির্বাচিত বা পরাজিত প্রার্থীর।
ভোটের ২০ দিনের মাথায় সোমবার (২৪ জানুয়ারি) উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দড়িতে টানানো পোস্টার আগের মতোই সড়কে শোভা পাচ্ছে। কোথাও কোথাও দড়ি ছিঁড়ে নিচে পড়ে আছে যত্রতত্র। যা দুর্ভোগের কারণ হচ্ছে সাভারবাসীর।
সরজমিনে সাভার, বিরুলিয়া, আশুলিয়া, শিমুলিয়া, পাথালিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, এখনো প্রার্থীদের লাগানো পোস্টারে ছেয়ে আছে অলিগলি। বিভিন্ন সড়কে বা পানির ড্রেনের পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রার্থীদের পোস্টার। রাতে নানা জায়গায় পোস্টার পোড়াতেও দেখা গেছে। এতে আশপাশের পরিবেশ ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। পাথালিয়া ও শিমুলিয়া ইউনিয়নের গেরুয়া এলাকায় যত দূর চোখ যায় শুধু পোস্টার।
আশুলিয়া ইউনিয়নের আউকপাড়া এলাকার মেহেরাজ নামের এক দোকানি জানান, পোস্টারগুলো সরাতে এখন পর্যন্ত কোনো লোক আসেননি। এমনকি কেউ নিজ থেকে সরাতে চাইলেও বিভিন্ন ধরনের জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হয়।
শিমুলিয়া ইউনিয়নের নিজাম নামের এক দোকানি বলেন, কিছু পোস্টার আমার দোকানের দরজার সামনে ঝুইলা ছিল। এই জন্য কয়েকদিন আগে আমি নিজেই পোস্টারগুলো একটু সরাইছি। পোস্টার থাকলে তো চলাচলেও সমস্যা হয়।
একই ধরনের কথা বললেন বিরুলিয়া এলাকার বাসিন্দা খাদেমুল ইসলাম। তিনি বলেন, পোস্টারগুলো কেউ পরিষ্কার করছে না, আবার নিজেরা পরিষ্কার করতে গেলেও ঝামেলা। জয়ী প্রার্থীর কোনো লোক দেখলে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করেন। এলোমেলোভাবে পড়ে থাকায় রাস্তাঘাট অপরিষ্কার মনে হয়।
সাভার নাগরিক কমিটির নেতা কৃষিবিদ ড. রফিকুল ইসলাম ঠান্ডু মোল্লা বলেন, নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের পক্ষ থেকে যেসব পোস্টার ও ব্যানার ঝোলানো হয়েছে, তা অপসারণে কারো মাথাব্যথা নেই। এসব পোস্টার ও ব্যানারের কারণে পরিবহণ চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। এসব অপসারণে প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
এদিকে নির্বাচন কার্যালয় বলছে, আচরণ বিধিমালার ৭-এ অনুযায়ী, যে কোনো স্থানে পোস্টার, লিফলেট এবং হ্যান্ডবিল ঝুলানো ও টাঙানোর বিধান থাকায় সাধারণত একটা দড়ির মধ্যে অনেক পোস্টার ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে পরিবেশ দূষণ হয়, এতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রার্থীর নিজ খরচে মালিকপক্ষের অনুমতিক্রমে সর্বসাধারণের ব্যবহারযোগ্য যে কোনো জমির ওপর ১০টি স্থানে নির্দিষ্ট আকারের কাঠের বোর্ডে পোস্টার সাঁটানোর কথা বলা হয়েছে, যেগুলো নির্বাচন শেষ হওয়ার সাত দিনের মধ্যে প্রার্থীর খরচে অপসারণ করতে হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা মুনির হোসাইন খান বলেন, নির্বাচনের পর অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদেরই নিজ দায়িত্বে এসব পোস্টার সরিয়ে ফেলার কথা। আর বিষয়টি এখন উপজেলা প্রশাসন দেখবেন। তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।