শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৭:২৫ পূর্বাহ্ন
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক : মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় বন্যায় ভেসে গেছে প্রায় ১০ কোটি টাকার মাছ। এরমধ্যে পুকুর, দীঘি ও খামারের মাছ ভেসে যাওয়ায় মৎস্য সেক্টরে জড়িত লোকজন বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এতে আর্থিক সংকটের আশংকা করছেন সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলো।
মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় প্রায় ১ হাজার পুকুর রয়েছে। দীর্ঘদিন পর এ বছরের অনাকাঙ্খিত বন্যায় মাছ ভেসে যাওয়ায় ৪৪৫ জন ক্ষতিগ্রস্ত খামারি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এতে মৎস্য খাতে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অধিকাংশ মৎস্য খামারি বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও, সমিতি ও স্থানীয় সুদ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধারদেনা করে টাকা এনে পুকুর বন্ধক ও লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেছেন। ফলে, ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য খামারিদের লাভতো দূরের কথা তাদের ঋণ পরিশোধ করা যেন মরার ওপর খড়ার ঘা।
সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ দীঘি, মৎস্য খামার ও পুকুরের পাড় পানিতে তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। কোনো কোনো পুকুরের পাড়ের ওপর ৫ থেকে ৭ ফুট পানি হয়েছে। অনেক পুকুরের চার পাশে জাল ও বানা দিয়ে মাছ আটকে রাখার চেষ্টা করলেও তা সফল হয়নি। তলিয়ে যাওয়া পুকুরগুলো থেকে মাছ বেরিয়ে গেছে। চান্দহর ইউনিয়নের রিফায়েতপুর এসআলম দিঘি মৎস্য খামারের মালিক মোঃ আবুল হোসেন বলেন, আমার ৬টি পুকুরে (ঘেরে) রুই, কাতলা,
মৃগেলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করেছিলাম। বন্যায় পুকুর তলিয়ে প্রায় সব মাছই বেরিয়ে গেছে। জাল দিয়ে আটকিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। এতে আমার প্রায় ২০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বায়রা ইউনিয়নের বাইমাইল গ্রামের ফরিদ দেওয়ানের পুকুরের মৎস্য খামারি দেওয়ান লিয়াকত হোসেন রুমল বলেন, আমি ১৬ বিঘা আয়তনের পুকুরটিতে রুই, কাতলা, মৃগেল, তেলাপিয়া, সিলভারকার্প ও বড়পুটি মাছ চাষ করেছিলাম। বন্যায় দু’পাশের পুকুরপাড় তলিয়ে মাছ বের হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৪ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ধল্লা ইউনিয়নের গাজিন্দা গ্রামের সোহেল রানা বলেন, অন্যের ২টি পুকুর লিজ নিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করে আমার প্রায় ৩ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য খামারিরা সরকারি আর্থিক সহযোগিতার জোর দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সিংগাইর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ওয়াহিদুল আবরার বলেন, এ উপজেলা মৎস্য খাতে অনেক পিছিয়ে আছে। এ সেক্টরকে গুরুত্বের সাথে বরাদ্দ বাড়িয়ে নদী, খাল, বিল খনন করা দরকার। এ বছর হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যায় রুপ নেয়ায় মৎস্য চাষি ও পুকুর মালিকেরা পূর্ব সর্তকতা অবলম্বন করতে পারেনি।
এ কারণে উপজেলার অধিকাংশ চাষির পুকুর, জলাশয় ও মাছের ঘের ভেসে গেছে। তিনি আরো বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিদের তালিকা করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এসএস