রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:২১ পূর্বাহ্ন
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক : আপন ভাইয়ের ১৭টি স্বর্ণের বার গায়েব করতে ছিনতাইয়ের নাটক সাজান জিতেন ধর (৪৮) নামের এক ব্যক্তি। নাটকের পর একটি বার বিক্রিও করেন তিনি। পরে অভিযান চালিয়ে তার কাছ থেকে ১৬ স্বর্ণের বার উদ্ধার করেছে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। এরপরেই ফাঁস হয় ছিনতাই নাটকের।
অভিযুক্ত জিতেন ধর রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার জামনগর এলাকার দ্বীনেশ ধরের ছেলে। স্বর্ণের বারগুলোর মালিক জিতেন ধরের আপন ভাই দ্বিজেন ধর (৫০)। তিনি ফেনীতে থাকেন।
শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে মহানগর পুলিশ (আরএমপি) সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়।
আরএমপির মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, ফেনী থেকে ১৭টি স্বর্ণের বার নিয়ে গত ২১ ডিসেম্বর ভোরে বাড়িতে আসেন দ্বিজেন ধর। পরে ভাই জিতেন ধরকে স্বর্ণের বারগুলো রাখতে দেন তিনি।
প্রতিটি স্বর্ণেরবারের ওজন ১০ ভরি। ১৭ বারের মূল্য প্রায় এক কোটি ১২ লাখ ৭১ লাখ টাকা।
জিজ্ঞাসাবাদে জিতেন ধর পুলিশকে জানায়, তিনি ঋণগ্রস্ত। এতোগুলো স্বর্ণের বার হাতে পেয়ে সেগুলো আত্মসাতের পরিকল্পনা করেন তিনি। এ জন্য স্বর্ণের পরিবর্তে তিনটি সীসার রড কাগজে স্কচটেপ দিয়ে পেঁচিয়ে স্বর্ণের বারের ব্যাগে রাখেন। আর আসলগুলো নিজের বাড়িতেই রাখেন। পরে দ্বিজেন তার ভাই জিতেনকে সঙ্গে নিয়ে রাজশাহী শহরে জুয়েলার্সের দোকানে স্বর্ণের বার বিক্রি করতে আসেন। ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে জিতেন আগে থেকেই ছিনতাইয়ের নাটক সাজান।
জিতেন ও দ্বিজেন নগরীর শিরোইল এলাকায় পৌঁছামাত্র পরিকল্পনা মাফিক দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে চারজন এসে নিজেদের ‘প্রশাসনের লোক’ পরিচয় দেন। তাদের কাছে থাকা হ্যান্ডকাপ দেখান।
তারা জিতেনের কাছে থাকা ব্যাগটি জোর করে কেড়ে নেয়। মানিব্যাগ এবং দুটি মুঠোফোনও ছিনিয়ে নেন। এই ঘটনায় দ্বিজেন ধর ওই দিনই নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, ছিনতাইয়ের নাটকটি সাজিয়েছিলেন জিতেন নিজেই। পরিকল্পনা মাফিক মিজানুর রহমান মিজান ও মৃদুল নামে দুই ব্যক্তি পুঠিয়া থেকেই বাসের পেছনে পেছনে মোটরসাইকেল নিয়ে আসেন। তারা ব্যাগ ছিনতাইয়ের জন্য শহরে অন্য তিনজনকে মোটরসাইকেল নিয়ে প্রস্তুত রাখেন। জিতেন ও দ্বিজেন বাস থেকে নামামাত্রই অপেক্ষায় থাকা ব্যক্তিদের কাছে সংবাদ পৌঁছে দেন মিজান ও মৃদুল। এরপরই ব্যাগ কেড়ে নিয়ে পালিয়ে যান তারা।
তবে আসল স্বর্ণের বারগুলো জিতেনের বাড়িতেই ছিল। এর মধ্যে একটি বার বিক্রিও করেন তিনি। পরে তদন্তে ধরে ফেলে পুলিশ। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার শেকড়ে যায় তদন্তকারী দল।
এরপর শুক্রবার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার হন জিতেন। সেখান থেকে উদ্ধার হয় ১৬টি স্বর্ণের বার। তবে পলাতক রয়েছেন জিতেনের সহযোগীরা। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এসএস