রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক : ২৫ বছর আগে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক আহসান হাবিব কামাল এবং একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী জাকির হোসেনকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও তাদেরকে এক কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই মামলায় আরও তিনজনকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সোমবার (৯ নভম্বের) বিকেলে বরিশাল বিভাগীয় বিশেষ আদালতের বিচারক মো. মহসিনুল হক এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিনজন হলেন- বরিশাল পৌরসভার তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইছাহাক, তৎকালীন সহকারী প্রকৌশলী (বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী) খান মো. নুরুল ইসলাম, তৎকালীন পৌরসভার সাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) মো. আব্দুস ছাত্তার ।
রায় ঘোষণার পর আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালসহ দণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়। এ সময় সাবেক মেয়র কামালের সমর্থকরা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করেন।
আহসান হাবিব কামাল বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় মৎসজীবী বিষয়ক সম্পাদক ও বরিশাল জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। তবে বর্তমানে তিনি বিএনপির দলীয় কোনো পদে নেই। ২০১৩ সালের নির্বাচনে তিনি বিএনপির সমর্থনে সিটি মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হওয়ার আগে ১৯৯৫ সালে বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন আহসান হাবিব কামাল । ওই সময় আহসান হাবিব কামাল ও অন্য আসামিরা দুর্নীতির মাধ্যমে ২৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৩৯ টাকা আত্মসাৎ করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
বরিশাল বিভাগীয় বিশেষ আদালতের বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) মো. হারুন অর রশিদ মামলার বরাত দিয়ে জানান, ১৯৯৫-৯৬ সালে বরিশাল টিএন্ডটির ভূ-গর্ভস্থ ক্যাবল স্থাপনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামতের জন্য তৎকালীন টেলিফোন শিল্প সংস্থা থেকে পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে চারটি চেকের মাধ্যমে ৩৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়। তৎকালীন বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান আহসান হাবিব কামাল কোনো প্রকার দরপত্র আহ্বান না করে জাকির হোসেনের মালিকানাধীন হাই ইয়ং নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সড়ক মেরামতের কাজ দেন।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী জাকির হোসেন ১১ লাখ ৯৯ হাজার ৩৭১ টাকা সড়ক সংস্কার বাবদ খরচ করেন এবং অবশিষ্ট ২৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৩৯ টাকা তৎকালীন চেয়ারম্যানসহ অভিযুক্ত অন্য সরকারি কর্মকর্তারা মিলে আত্মসাৎ করেন।
এ ঘটনায় ২০০০ সালের ১১ অক্টোবর তৎকালীন জেলা দুর্নীতি দমন কর্মকর্তা (বর্তমানে উপ-পরিচালক) মো. আব্দুল বাসেত বাদী হয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক এইচএম রহমতউল্লাহ ২০১১ সালের ১৯ জুলাই আহসান হাবিব কামালসহ পাঁচজনকেই অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে ২৬ জনের মধ্যে ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক আজ এ রায় দেন।
এসএস