সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০৫ অপরাহ্ন
আশুলিয়ায় নোটিশের মাধ্যমে ছবি প্রকাশ করে একটি গেঞ্জি তৈরি কারখানার ৫৩ জন শ্রমিককে সাময়িক ভাবে অপসারণ করা হয়েছে। একই সাথে নোটিশে উল্লেখিত সকল শ্রমিকদের ৭ দিনের মধ্যে কারন দর্শানোর মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (০৭ আগস্ট) আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার ডিকে গ্রুপের ‘ডিকে নীটওয়্যার লিমিটেড’ কারখানার শ্রমিকদের সাময়িক অপসারণ করে মূলফটকে ছবিসহ তালিকা টাঙিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এঘটনায় শ্রমিকদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে- শ্রম আইন, শ্রমবিধি বহির্ভূতভাবে সংঘবদ্ধ অযৌক্তিক ধর্মঘট, কর্তৃপক্ষের যৌক্তিক আদেশ অমান্য করে কাজে বিরতি/কাজ বন্ধ, কারখানায় উশৃঙ্খলতা/দাঙ্গা-হাঙ্গামার মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি ও কারখানার ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি সাধন করার কারনে বাংলাদেশ শ্রমআইন (ধারার উল্লেখ নাই) মোতাবেক নিম্নলিখিত (ছবি সম্বলিত) শ্রমিকদেরকে তদন্ত কালীন অপসারণ করা হলো। অপসারণকৃত শ্রমিকদের অপসারণের নোটিশ ডাকযোগে স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানায় প্রেরণ করা হবে।
শ্রমিকরা জানান, গত ৩ আগস্ট কারখানায় কাজ নিয়ে শ্রমিকদের সাথে কারখানার কর্মকর্তা সোহেলের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে কারখানার ভিতরে অবস্থান করতে থাকে। পরে শ্রমিকরা বাসায় চলে গেলে পর দিনই কারখানা শ্রম আইন ১৩ (ক) ধারায় বন্ধ ঘোষণা করেন। পরে কারখানার গেটের সামনে ৫৩ জনের ছবি দিয়ে অপসারনের নোটিশ প্রদান করেন।
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাংগঠনিক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু জানান, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোভিড-১৯ এর মধ্যে শ্রমিকদের সাময়িক বরখাস্ত করা খুবই অমানবিক।
তিনি বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে সংগঠনের পক্ষ থেকে আলোচনা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের কথা, তারা সাময়িক বরখাস্তকৃত শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল করবে না। শ্রম আইনের ২০ ধারা অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্তকৃত শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধ করবে বলেও জানিয়েছে। কিন্তু শ্রমিকরা ২৬ ধারা অনুযায়ী তাদের পাওনাদি দাবি করছে।
লিটন মিয়া, আকাশ, রাখিমনিসহ বরখাস্ত হওয়া একাধিক শ্রমিক জানান, পহেলা আগস্ট কারখানা খোলার পর কিছু শ্রমিক কাজে যোগদান করে। কিন্তু পরিবহন না চলায় অনেকেই কর্মস্থলে আসতে পারেনি। তাই শ্রমিক কম থাকায় বিচ্ছিন্নভাবে শ্রমিকদের কাজ করতে বলা হলে কিছু শ্রমিকের সাথে কর্তৃপক্ষের বাকবিতণ্ডা হয়। সেই সূত্র ধরে বুধবার কারখানায় কাজ শেষে কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেন।
নোটিশে ছবি প্রকাশ করা হয়েছে কারখানাটির ওহাব নামের এক শ্রমিকের। তিনি বলেন, কাজ নিয়ে কারখানার কর্মকর্তা সোহেলের সাথে শ্রমিকদের বাক-বিতন্ডা হয়। পরে শ্রমিকরা কারখানায় শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি পালন করে বাসায় চলে যায়। কারখানায় কোন দাঙ্গা-হাঙ্গামার ঘটনা ঘটেনি। সামান্য কথা কাটাকাটির জেরে ৫৩ জন শ্রমিককে অপসারণ করা হয়েছে। আর এটাই ছাঁটাই বলে চালিয়ে দেওয়া হবে।
এ ঘটনায় কারখানাটির অ্যাডমিন ম্যানেজার আল-আমিন লিটুর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায় নি। এমনকি মেসেজ পাঠানো হলেও তিনি এর কোন জবাব দেন নি। এছাড়া কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএকিউএম জাহিদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকেও পাওয়া যায়নি।