সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০৫ অপরাহ্ন
আশুলিয়ার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্র বর্মণের (৩৬) মরদেহের পাঁচ টুকরা উদ্ধার করেছে র্যাব। আজ সোমবার বেলা একটার দিকে স্কুল অ্যান্ড কলেজের শহীদ মিনারের সামনে দেয়ালের পাশে গর্ত করে লাশের খণ্ডিত অংশগুলো উদ্ধার করা হয়। দক্ষিণখানে আশকোনার একটি ডোবায় অধ্যক্ষের মরদেহের বাকি অংশের তল্লাশি অভিযান চালাবে র্যাব।
র্যাব বলছে, মিন্টু বর্মণকে হত্যার পর লাশ ছয় টুকরা করে স্কুলের মাঠে পুঁতে ফেলা হয়। দেহ থেকে মিন্টুর মাথা বিচ্ছিন্ন করে উত্তরায় একটি ডোবায় ফেলা দেওয়া হয়। ২৮ দিন ধরে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
র্যাব বলছে, স্কুলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মিন্টু বর্মণকে খুন করা হয়। পরিকল্পনা করেন রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই সহপ্রতিষ্ঠাতা রবিউল ইসলাম ও মোতালেব। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন রবিউল ও তাঁর ভাগনে রহিম বাদশা। র্যাব তিনজনকেই আটক করেছে। তাঁরা র্যাবের অভিযান দলের সঙ্গে রয়েছেন।
অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্র বর্মন (৩৬) লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউপির বাড়াইপাড়া গ্রামের শরত বর্মনের ছেলে। তিনি মোতালেব, শামসুজ্জামান ও রবিউল ইসলাম নামে তিন ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে গত দুই বছর আগে সাভারের জামগড়া বেরন এলাকার জাহিদুল ইসলামের বাড়ি ভাড়া নিয়ে সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে পার্শ্ববর্তী স্বপ্ন নিবাসে ভাড়া থেকে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
এর আগে গত ১৩ জুলাই সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্র বর্মন উপজেলার জামগড়া বেরন এলাকার স্বপ্ন নিবাস নামক বাসা থেকে তিনি নিখোঁজ হন। এরপর থেকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও কোনো সন্ধান না পাওয়ায় গত ২২ জুলাই তার ছোট ভাই দিপক চন্দ্র বর্মন আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
মিন্টু চন্দ্র বর্মণ সাত বছর ধরে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় বসবাস করতেন। তিনি সেখানকার আমিন মডেল টাউন স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষকতা করতেন। দুই বছর আগে (২০১৯ সাল) মিন্টু চন্দ্র বর্মণসহ চারজন মিলে জামগড়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়েন। অন্য তিন সহপ্রতিষ্ঠাতা হলেন রবিউল ইসলাম, মোতালেব ও শামসুজ্জামান। মিন্টু চন্দ্র বর্মণ ছিলেন এর অধ্যক্ষ। গত ১৩ জুলাই থেকে তাঁর সন্ধান মিলছিল না।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন প্রথম আলোকে বলেন, যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের ভাষ্যমতে, স্কুলের শ্রেণিকক্ষেই মিন্টু বর্মণকে কুপিয়ে খুন করা হয়। লাশ ছয় টুকরা করে স্কুলের মাঠেই পুঁতে ফেলা হয়। এরপর বিচ্ছিন্ন মাথা ফেলা হয় দক্ষিণখানের আশকোনা এলাকায়। আটক সবাই খুনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।