রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক : সিলেট থেকে ছেড়ে যাওয়া সুনামগঞ্জের দিরাইগামী চলন্ত বাসে ধর্ষণ থেকে বাঁচতে লাফ দেয়া সেই কালেজছাত্রীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার মধ্যরাতে তাকে ওসমানীতে ভর্তি করেন স্বজনরা। তিনি মাথায় ও হাতে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এদিকে এ ঘটনায় তরুণীর বাবা বাদী হয়ে বাসের চালক, সহকারীসহ ৩ জনকে আসামি করে দিরাই থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। তবে রোববার বেলা ১১টা পর্যন্ত কাউকে এ ঘটনায় গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
রোববার সন্ধ্যায় দিরাইয়ে চলন্ত বাসে ওই কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় বাসের চালক ও তার সহকারীরা। ধর্ষণ থেকে বাঁচতে বাসের জানালা দিয়ে লাফ দেন তিনি।
দিরাই পৌর এলাকার বাসিন্দা ওই তরুণী দিরাই সরকারি কলেজের স্নাতক শ্রেণির ছাত্রী। তিনি সিলেটের লামাকাজি এলাকার বোনের বাড়ি থেকে বাসে করে দিরাইয়ে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন।
রোববার রাতে ওই কলেজছাত্রীকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোন জামাই। তিনি বলেন, দুপুরে লামাকাজি থেকে আমি তাকে বাসে তুলে দিয়েছিলাম। সন্ধ্যায় দিরাই বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছার আগে বাস ফাঁকা হয়ে যায়। এ সময় চালক ও হেলপার তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। জীবন বাঁচাতে সে বাসের জানালা দিয়ে লাফ দেয়। এরপর বাসটি আরও গতি বাড়িয়ে বাসস্ট্যান্ডে চলে যায়।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় দুজন আমার শ্যালিকাকে উদ্ধার করে দিরাই হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে আমরা ওসমানীতে নিয়ে আসি।
ঘটনার খবর পেয়ে মধ্যরাতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান সিলেট বাস মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল মুকিত মুকুল। তিনি বলেন, চলন্ত বাসে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি খুবই ন্যাক্কারজনক। সিলেট বিভাগে এরআগে কখনও এমন ঘটনা ঘটেনি। এটি পুরো পরিবহন জগতের জন্য লজ্জাজনক।
তিনি বলেন, এমনিতেই মানুষজন আমাদের সম্পর্কে বাজে ধারণা পোষণ করেন। এখন এরকম ঘটনার পর মানুষ আমাদের আরও খারাপ ভাববে। তাই আমরা চাই অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। আমরা দায়ীদের ধরতে পুলিশকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। ওই তরুণীর পরিবারের পাশেও আমরা থাকব।
এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, ওই কলেজছাত্রী মাথায় ও হাতে আঘাত পেয়েছেন। মাথার আঘাত গুরুতর মনে হচ্ছে। তিনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে আছেন।
জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যায় দিরাই উপজেলার মদনপুর সড়কের সুজানগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সিলেট থেকে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে চলাচলকারী ফাহাদ অ্যান্ড মাইশা পরিবহনের একটি চলন্ত বাসে (সিলেট-জ-১১-০৭২৩) কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ওই গাড়ির চালক ও হেলপাররা। এ ঘটনার পর রাতে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে দিরাইয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান রোববার সকালে বলেন, শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে বাসচালক ও তার সহকারীকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।
এসএস