শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ০১:২৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোটার : ধামরাইয়ে নীট এইড লিমিটেড নামে একটি কোম্পানী হিন্দুদের শ্মশানে সাইনবোর্ড টানিয়ে দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর প্রতিবাদের গতকাল মঙ্গলবার সনাতন ধর্মের নারী-পুরুষ বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এ নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে দেখা দিয়েছে উত্তেজনা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সূতিপাড়া ইউনিয়নের বেলীশ্বর গ্রামে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, বেলীশ্বর গ্রামে প্রায় ৩০০ হিন্দু পরিবারের বসবাস। সদস্য সংখ্যা প্রায় সহস্রাধিক। এ গ্রামের হিন্দুদের কেউ মারা গেলে তারা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মৃত দেহের সৎকার বা অন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করে আসছিলেন। পরে বেলীশ্বর কালীমন্দির সংলগ্ন সর্বজনীন মহাশ্মশানের নামে বেলীশ্বর মৌজার আর এস ২৫৫ নং দাগে ১৮ শতাংশ জমি ৪.১০.১৯৮৮ ইং সনে সাব কবলা ৭০১০ নং দলিলমূলে উৎসর্গ করে দেন বেলীশ্বর গ্রামের কালীপদ বসাক। এরপর থেকে সেখানে নিয়মিতভাবে অন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
দীর্ঘদিন ধরে হিন্দুদের সমাধিস্থল বা শ্মশান দখলের পায়তারা করে আসছে একটি চক্র। এ নিয়ে ধামরাই থানায় বেলীশ্বর গ্রামের এসআই সঞ্জয় কুমার বসাকের বিরুদ্ধে সাধারন ডায়েরী করে বেলীশ্বর সর্বজনীন মহাশ্মশানের সভাপতি গকুল চন্দ্র পাল। গত কয়েকদিন আগে আকস্মিকভাবে ওই শ্মশানে‘ নীট এইড লিমিটেড’ নামের একটি কোম্পানী বায়না সূত্রে মালিক লিখে একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে এবং এর প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার হিন্দুধর্মের তিনশতাধিক নারী-পুরুষ বিক্ষোভ মিছিল করে।
এসময় বক্তব্য রাখেন বেলীশ্বর সর্বজনীন মহাশ্মশান কমিটির সভাপতি গকুল চন্দ্র পাল, সাধারন সম্পাদক খুশিমহন পাল, সহসভাপতি রমে পালসহ অনেকে। তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সর্বজনীন মহাশ্মশান দখলের প্রক্রিয়া হিসেবে একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছেন একটি চক্র। আমাদের জীবন থাকতে শ্মশানের জমি দখল করতে দেব না। আমরা প্রশাসনের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাই।
এ বিষয়ে নীট এইড লিমিডেটের চেয়ারম্যান রাসেল হোসেন বলেন, আমি কোন শ্মশানের জমি দখল করেনি। যার নামে রেকর্ডভ’ক্ত জমি তার ওয়ারিশানের কাছ থেকে লিখে নিয়েছি।
এদিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য আমান উল্লাহ জানান, প্রায় চল্লিশ বছর ধরে বেলীশ্বর গ্রামের হিন্দুরা শ্মশান হিসেবে এ জমি ব্যবহার করে আসছেন। শ্মশান কেউ দখল করতে আসলে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।
ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ আতিকুর রহমান বলেন, শ্মশানের জমি দখলের বিষয়ে একটা সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে বলে শুনেছি। তবে কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।