রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক : মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের মাধবপুর ও জামির্ত্তা ইউনিয়নের নোয়াদ্দা মৌজার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত যোগী খাল দখল করে চলছে বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণের কাজ। আর এ কাজটি করছেন সুজন মেটাল ইন্ডাষ্ট্রিজের মালিক দেওয়ান তমিজ উদ্দিন (তজু কোম্পানী)। তিনি চান্দহর ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের মৃত কিয়ামুদ্দিন ওরফে কিনু দেওয়ানের পুত্র।
এদিকে, মানিকনগর-মাধবপুর কবরস্থান ও মাদরাসার রাস্তার খালের ওপর নির্মিত ব্রীজটি অকেজো হয়ে পড়বে। সেই সঙ্গে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে নোয়াদ্দা মৌজার বিপুল পরিমাণ ফসলি জমি জলাবদ্ধতায় পরিণত হবে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিন শনিবার (১৩ জুন) দুপুরে দেখা গেছে, সিংগাইর-মানিকনগর-সিরাজপুর রাস্তার মাধবপুর এলাকায় রাস্তা সংলগ্ন খাল দখল করে পুরোদমে চলছে বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণের কাজ। কবরস্থান ও মাদরাসা রাস্তার প্রবেশমুখে ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ৩২ লাখ ৫৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের নির্মিত আরসিসি ব্রীজের পশ্চিম পাশে সুজন মেটাল ইন্ডাষ্ট্রিজের কর্ণধার দেওয়ান তমিজউদ্দিন জমি ক্রয় করেন। ওই জমিতে বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ করতে গিয়ে পানি প্রবাহের দৃশ্যমান খালটি ও দখল করে নিচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, মানিকনগর কানুখালী ঘাট থেকে প্রবাহমান এ যোগী খালটি দিয়ে চান্দহর কোল হয়ে এলাকার লোকজন বন্দর নগরী নারায়ণগঞ্জ, সদরঘাট ও সাভারসহ নৌপথে বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণ করতো। কালের বিবর্তনে নৌপথ বন্ধ হয়ে গেলেও বর্ষা মওসুমে পানি প্রবাহের জন্য খালটি তার অস্তিত্ব ধরে রেখেছে। সরকারের পক্ষ থেকে খালটি টিকিয়ে রাখতে অর্ধ-কিলোমিটারের মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছে ৩টি ব্রীজ। চলমান এ খাল দখলে কবরস্থান ও মাদরাসার এ ব্রীজটি বন্ধ হয়ে গেলে অপর ব্রীজ দু’টির কার্যকারিতা ও থাকবে না বলে অনেকেই আশংকা করছেন। সেই সঙ্গে পুরো খালটি পর্যায়ক্রমে চলে যাবে দখলদারদের কবলে।
পার্শ্ববর্তী মানিকনগর গ্রামের শুকুর আলী (৬৮), ইউনুছ আলী (৬৫) ও সিরাজুল ইসলামসহ (৪৮) অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, তজু কোম্পানী টাকার জোরে প্রকাশ্যে খালের মধ্যে বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ করে ব্রীজটিকে অকেজো করছেন।
তারা আরো বলেন, তিনি প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকার লোকজন নিরবে এ অন্যায় মুখবুজে সহ্য করছেন। অভিযুক্ত দেওয়ান তমিজ উদ্দিন (তজু কোম্পানী) বলেন, আমি রেকর্ডীয় জমি ক্রয় করে বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ করছি। খাল দখল করে থাকলে আপনি রিপোর্ট করে দেন।
ব্রীজ বন্ধ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ওই সময়ে একটি মহল আর্থিকভাবে লাভবানের জন্য ব্রীজটি নির্মাণ করেছিল। জামির্ত্তা ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, জনস্বার্থে রাস্তা সংলগ্ন দৃশ্যমান খাল ব্যক্তি মালিকানা হলেও বন্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। অফিস থেকে লোক পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে পরিমাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মেহের নিগার সুলতানা বলেন, বিষয়টি সরেজমিন দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসএস