শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:০৬ পূর্বাহ্ন

নোটিশঃ
সারাদেশে ব্যাপী প্রতিনিধি/সংবাদদাতা নিয়োগ চলছে আগ্রহীরা ইমেইলে সিভি পাঠান- ‍admin@dailybdnews360.com  । আমাদের সাথেই থাকুন, ধন্যবাদ সবাইকে।
সংবাদ শিরোনামঃ

অস্থির নিত্যপণ্যের বাজারে বছর শেষে স্বস্তি

দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক : সারাবছর জুড়েই সাধারণ মানুষকে ভুগিয়েছে নিত্যপণ্যের বাজার। সরকারি হিসাবেই বলা হচ্ছে, সাধারণ মানুষের আয় না বাড়লেও প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়েছে। বাজারের তথ্য বলছে, সবচেয়ে বেশি ভুগেছেন সেই সব গরিব মানুষ যারা মোটা চালের ভাত খান। সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য মতে,  গত এক বছরে মোটা চালের দাম বেড়েছে ৪৭.৬৯ শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম বেড়েছে ২০ টাকার মতো।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, এক বছর আগে যে চাল ৩০ টাকায় পাওয়া যেত। এখন সেই চাল কিনতে হচ্ছে ৫০ টাকা দিয়ে। অর্থাৎ নতুন বছর শুরু হচ্ছে মোটা চালের কেজিতে ২০ টাকা বাড়ার মধ্য দিয়ে। সরকারি হিসাবে, গত এক বছরে সরু বা চিকন ও মাঝারি চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ১৩ টাকার মতো।
চালের দাম বেড়ে যাওয়ার জন্য তিনটি কারণ উল্লেখ করেন বাদামতলী ও বাবু বাজার চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন। তিনি  বলেন,  প্রথমত, ধানের দাম বেড়ে গেছে আগের বছরের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। দ্বিতীয়ত, এই বছরে বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। তৃতীয়ত, যত্রতত্র ধান ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ব।

 

তিনি বলেন, ‘যত্রতত্র ধান ব্যবসায়ী গড়ে ওঠার কারণে প্রতিযোগিতা করে ধান কেনার মতো ঘটনা ঘটেছে এবার। যার ফলে ধানের দাম বেড়েছে। আর ধানের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে চালের দামও বেড়েছে। যদিও মানুষের আয় বাড়েনি।’
চালের দাম না কমায় বিপদে আছে খেটে খাওয়া মানুষ। রাজধানীর মুগদার একটি বাসায় ঝিয়ের কাজ করেন সালেহা বেগম। তিনি বলেন, ‘চালের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে তার একটি এনজিওতে রাখা সঞ্চয় ভেঙে সংসার চালাতে হচ্ছে।’
চালের পাইকারি বাজার কদম তলীর বাবু বাজারে  নাজিরশাইল চালের দাম এখন কেজিতে ৬৪-৬৫ টাকা।  খুচরা বাজারে এই চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৬ টাকা কেজিতে। মিনিকেট চালের দাম পাইকারিতে মানভেদে প্রতি কেজি ৬২-৬৪ টাকা। খুচরা বাজারে এই চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা। এই মৌসুমের চাল স্বর্ণা (মোটা চাল) মিল গেটে প্রতি কেজির দাম ৪৬ টাকা। পাইকারিতে ৪৮ টাকা। আর খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি।

নিত্য পণ্যের মধ্যে সাধারণ মানুষকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে সবজি, চাল, আলু ও পেঁয়াজ । তবে পেঁয়াজ ও সবজির দাম অনেকটাই কমে আসলেও চাল, ডাল ও আলুর দাম এখনও ক্রেতাদের নাগালের বাইরে রয়েছে। গত বছরের ২০ টাকা কেজি আলু এবার কিনতে হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি দরে। যদিও দুই-তিন মাস আগেও এই আলু ৬০ টাকায় কিনতে হয়েছে। ক্রেতারা নতুন বছরে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মানিক নগর এলাকার বাসিন্দা গোলাম কিবরিয়া বলেন,  ‘পেঁয়াজ ও সবজির দাম যেভাবে কমেছে। নতুন বছরে সেভাবে চাল ডালসহ অন্যান্য পণ্যের দামও কমা উচিত। এক্ষেত্রে তিনি বাজার মনিটরিংয়ে সরকারের নজরদারি আরও বাড়ানোর পরামর্শ দেন।’

সরকারি হিসেবে দেখা যাচ্ছে, সব ধরনের তেলের দামও বেড়েছে। টিসিবি বলছে, এক বছরের ব্যবধানে প্রতি কেজি খোলা সয়াবিনের দাম বেড়েছে ২২ টাকা। এখন বছর আগে যে সয়াবিন ৮৫ টাকায় পাওয়া যেত এখন সেই সয়াবিন কিনতে হচ্ছে ১০৭ টাকা। খোলা পামওয়েলের দামও বেড়েছে কেজিতে ২১ টাকা। এক বছর আগে যে খোলা পামওয়েলের দাম ছিল ৭৪ টাকা, এখন সেই পামের দাম ৯৫ টাকা। এক বছর আগে ৫ লিটারের বোতল বিক্রি হতো ৪৫৫-৫০০ টাকা। এখন সেই একই সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৫৩০-৫৮০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি বোতলে দাম বেড়েছে ১২৫ টাকা। আর ১০০ টাকায় এক লিটার ওজনের বোতলের দাম বেড়ে হয়েছে ১২৫ টাকা।
দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে ডালও। সরকারি হিসেবে, এক বছর আগে মশুর ডালের (বড় দানা) দাম ছিল কেজিতে ৫৫ টাকা, এখন সেই ডালের দাম হয়েছে ৬৫-৭০ টাকা। গত এক বছরে মাঝারি মানের ডালের দাম বেড়েছে আরও বেশি। মাঝারি দানার ডালের প্রতি কেজির দাম এখন ৯০ টাকা। এক বছর আগে এই ডালের দাম ছিল ৬৫ টাকা। এক বছর আগে মুগ ডাল প্রতি কেজি বিক্রি হতো ৯০ টাকা। এখন সেই মুগ ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা।
সরকারি হিসেবে, গত এক বছরে দাম বেড়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম বেড়েছে ৬ শতাংশের মতো। ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২ শতাংশ। গুড়া দুধের দাম বেড়েছে ৬ শতাংশের মতো। চিনির দাম বেড়েছে ১.৬০ শতাংশ।
দাম বাড়া প্রসঙ্গে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সভাপতি গোলাম রহমান বলেন,  ‘গেল বছর জুড়েই নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করেছে। করোনার কারণে সাধারণ মানুষের আয় কমেছে। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মানুষের খরচ ঠিকই বেড়েছে।’

তিনি বলেন,  ‘অতি লোভী মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের কারণে আলুও পেঁয়াজের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে যায়। কারণ চাহিদার তুলনায় আমদানি কম হওয়া।’
বাজারের তথ্য বলছে, সারা বছরজুড়ে চাল, ডাল ও তেলের দাম বাড়লেও কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে আটা ময়দা। এই দুটি পণ্যের দাম বাড়েনি বরং বেশ খানিকটা কমেছে। টিসিবির হিসেবে, গত এক বছরে খোলা ময়দার দাম কেজিতে কমেছে ৩-৫ টাকা। এক বছর আগে যে ময়দা ৩৭-৪০ টাকা কেজি কিনতে হয়েছে। এখন সেই ময়দার দাম ৩৪-৩৫ টাকা কেজি। এক বছরের ব্যবধানে প্যাকেট ময়দা, প্যাকেট আটা ও খোলা আটার দাম কমেছে কেজিতে ১-২ টাকা।

এক বছরের ব্যবধানে দাম কমার তালিকায় রয়েছে পেঁয়াজও। গত বছরের এই সময়ে দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল প্রতি কেজি ১০০ টাকা। এখন সেই দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। বাজারের তথ্য মতে, আমদানি করা পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। অর্থাৎ এক বছর আগে আমদানি করা পেঁয়াজের প্রতি কেজির দাম ছিল ১১০ টাকা। এখন সেই পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে ৩৫ টাকায়। এছাড়া ফার্মের ডিমের দাম কমেছে ৬ শতাংশের মতো।

টিসিবির, হিসেবে, হলুদ ছাড়া বাকি সব মসলার দামই কমেছে। এক বছরের ব্যবধানে হলুদের দাম ২৯ শতাংশ বাড়লেও  রসুনের দাম কমেছে কেজিতে ৩৮ শতাংশ, শুকনো মরিচের দাম কমেছে ৬ শতাংশ, ধনে ও তেজপাতার দাম কমেছে ২১ শতাংশ, এলাচের দাম কমেছে ১৬ শতাংশ,  লবঙ্গের দাম কমেছে ১৭ শতাংশ, দারুচিনির দাম কমেছে ১১ শতাংশ, জিরার দাম কমেছে ১২ শতাংশ, আদার দাম কমেছে ৪৮ শতাংশ।

এদিকে শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় শিমের দাম কিছুটা বেড়েছে। প্রতি কেজি শিম ৩০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ২০-৩০ টাকা। গাজর বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি। বেগুনের কেজি ৩০-৪০ টাকা, করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা। এছাড়া ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে আগের মতোই ২০-৩০ টাকা। মুলা ১০ টাকা কেজি। ৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে লাউ। গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে নতুন আলুর দাম কমলেও পুরোনো আলুর দাম আগের মতোই রয়েছে। পাইকারিতে পুরোনো আলুর দাম এখনও ৪০-৪২ টাকা কেজি। খুচরা বাজারে তা ৪৫-৪৬ টাকা।

বাজারে আগাম আসা পেঁয়াজের (মুড়িকাটা) দামও কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে ক্রেতাদের। কাওরান বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা ছালাম ব্যাপারী বলেন, পুরোনো দেশি পেঁয়াজের দাম তুলনামূলকভাবে কম। পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি। খুচরা পর্যায়ে তা ৬৫ টাকা।
আর চীন থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি পাইকারিতে ২৫ টাকা। এই পেঁয়াজ খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে মিসরীয় পেঁয়াজের দাম এখনও ৪০-৪৫ টাকা কেজি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ধীরে ধীরে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ছে, দাম আরও কমবে।

এসএস 

সংবাদটি শেয়ার করুন:

আর্কাইভ

SatSunMonTueWedThuFri
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031     
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
       
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031     
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930 
       
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031   
       
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30      
   1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031 
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
       
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
       
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
       
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728   
       
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031   
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31      
   1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930  
       
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031    
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
       
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
       
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031     
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930 
       
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031   
       
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30      
   1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031 
       
   1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728    
       
891011121314
22232425262728
293031    
       
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
       
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
9101112131415
3031     
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
       
14151617181920
21222324252627
28293031   
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
   1234
       
     12
       
  12345
2728     
       
  12345
27282930   
       
28293031   
       
891011121314
29      
       
    123
18192021222324
       
      1
2345678
30      
© All rights reserved © 2019 Dailybdnews360.Com
Design & Developed BY-Dailybdnews360.com
error: কপি করা যাবে না !!